📢 আপনি আপনার এলাকার চোখ ও কান হতে পারেন! আপনার কাছ থেকে আসা প্রতিটি সংবাদ আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ছবি, ভিডিওসহ আপনার সংবাদ পাঠান — আমরা মনোযোগ দিয়ে যাচাই-বাছাই করব, এবং যেগুলো প্রকাশের যোগ্য সেগুলো আমরা সম্মানজনকভাবে সবার সামনে তুলে ধরবো। আসুন, একসাথে সত্যিকার অর্থে মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠি। ই-মেইল করুন: info@dailytotthotorongo.com

Header Ads

আমরাই খারাপ

দৈনিক তথ্য তরঙ্গ
প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২৫ | স্থান: ঢাকা | রিপোর্টার: বিশেষ প্রতিনিধি

আমরাই খারাপ

বাংলাদেশে যখনই রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থার দুর্নীতি, অন্যায়, অনিয়ম নিয়ে আলোচনা হয়, তখন প্রায় সবাই আঙুল তোলে জনপ্রতিনিধি, নেতা, এমপি, চেয়ারম্যান কিংবা মেম্বারদের দিকে। কিন্তু কেউ কি কখনো আয়নায় তাকিয়ে নিজের মুখটা দেখে? নিজেদের দায় স্বীকার করে? আসল কথা হলো—এই অন্যায়ের চক্রটি একতরফা নয়। এটা একটি যৌথ অপরাধ, যেখানে আমরা জনগণও সমানভাবে জড়িত। বরং, বলা যায় আমরা শিকড়। কারণ আমরা "টাকার বিনিময়ে" আমাদের ভোট বিক্রি করি—গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে দিই নিজের হাতে।

১. ভোট কেনা-বেচার দুর্বৃত্তায়ন: আমাদের কুকর্মের শুরু এখানেই

নির্বাচনের আগে হঠাৎ করেই নেতাদের হাতে টাকার ঝরনা বয়ে যায়। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) নির্বাচনের সময় ৫ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা খরচ করে। অথচ তার বেতন মাত্র কয়েক হাজার টাকা! একজন চেয়ারম্যান খরচ করে ২০ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা, পৌরসভার মেয়র ৫০ লাখ থেকে কয়েক কোটি টাকা! তাহলে প্রশ্ন উঠে—এই টাকা কোথা থেকে আসে? কেউ কি নিজের পকেট থেকে দিচ্ছে? না, এটা ভবিষ্যতের লুটের বিনিয়োগ।

"আমরা একবস্তা চাল, ৫০০ টাকা, কিংবা একটা শাড়ির বিনিময়ে নিজেদের বিক্রি করে দিই। যেন আমরা দাস, তারা মালিক। অথচ ভোট মানে শুধু একটি কাগজ নয়—এটা আমাদের অস্তিত্ব, অধিকার, ভবিষ্যৎ।"

২. জনপ্রতিনিধিদের ভণ্ডতা: চোরের গুণগান কবে থামবে?

নির্বাচনের আগে প্রতিটি মেম্বার, চেয়ারম্যান, মেয়র বলেন: "জনগণের সেবা করতে চাই"। কিন্তু বাস্তবতা—সেবা নয়, তারা আসে সম্পদ লুট করতে।

পদের নাম বেতন/সম্মানী নির্বাচনী ব্যয়
ইউনিয়ন মেম্বার ৩-৫ হাজার টাকা ৫-২০ লাখ টাকা
চেয়ারম্যান ১৫-২০ হাজার টাকা ২০-৫০ লাখ টাকা
পৌর মেয়র ৩০-৫০ হাজার টাকা ৫০ লাখ - কয়েক কোটি টাকা

পৌরসভার মেয়র, যিনি সারাজীবন ব্যবসায়ী ছিলেন না, হঠাৎ মেয়র হয়ে পাঁচ তলা বাড়ি, প্রাডো গাড়ি, দামী রিসোর্ট বানিয়ে ফেলেন—কোথা থেকে এল এই অর্থ?

এদের স্ত্রী-সন্তানরা বিদেশে যায়, বাচ্চারা বিদেশে পড়ে, অথচ জনগণ খেতে পায় না। তারপরেও আমরা হাততালি দিই, ফুলের মালা পরাই, আবার তাদের ভোট দিই।

৩. সচিব থেকে শুরু করে কর্মকর্তা পর্যন্ত—দুর্নীতির শিকড় ছড়ানো গাছ

আপনি ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের কথাই ধরুন। যারা সরকারি কর্মচারী হয়েও মেম্বার-চেয়ারম্যানদের চেয়ে বেশি দাপট দেখায়। কারণ তার পকেটে "ট্রেড লাইসেন্স", "ওয়ারিশন", "জন্ম সনদ", "সনদপত্র", "টেন্ডার", সবকিছুর তালা। প্রতিটি ফাইলে হাত পড়লেই ঘুষের দাম বসে—৫০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত।

"আমরাই ঘুষ দিয়ে কাজ করতে শিখে গেছি। আমরা ঘুষ দেই, ঘুষ খাওয়ার সংস্কৃতি পুষ্ট করি।"

৬. ভবিষ্যত: এই পথই কি চিরকাল চলবে? না কি সময় এসেছে জেগে ওঠার?

আমরা যদি চুপ করে থাকি, আমাদের সন্তানরাও একদিন এই চক্রেই পিষ্ট হবে। যদি আমরা এখনই সিদ্ধান্ত না নিই—ভোটের মূল্য বুঝব, ঘুষ দেব না, দুর্নীতিবাজকে সমাজচ্যুত করব—তাহলে আমাদের ভবিষ্যত আরও ভয়াবহ হবে।

"যে জাতি নিজের ভোট বিক্রি করে, তারা স্বাধীনতা হারায় নীরবে, ধীরে ধীরে।"

উপসংহার

আমরা যদি নিজের দিকে তাকাই, দেখি কতটা বিকৃত হয়ে পড়েছি, তাহলে বুঝতে পারব—সব দোষ নেতার নয়। আমরাও সমান দোষী। আমরা যদি সৎ থাকতাম, তাহলে কোন নেতা আমাদের উপর সাহস পেত না অত্যাচার চালানোর।

💬 আপনার মতামত কী?
এই বিষয়টি নিয়ে আপনি কী ভাবেন? মন্তব্যে জানাতে ভুলবেন না। আপনার মতামতই হতে পারে আরেকজনের চোখ খোলার সূত্র।

No comments

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

Powered by Blogger.