জনগণের গ্যাস কোথায় হারিয়ে গেল?
সরকার নির্ধারিত করেছে ১২ কেজির এলপিজি গ্যাসের দাম ৬৯০ টাকা। কিন্তু বাস্তবে আজ দেশের সাধারণ মানুষ সেই গ্যাস কিনছে ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায়। প্রশ্ন একটাই এই পার্থক্যের দায় কে নেবে?
দেশের প্রতিটি ঘরে এখন গ্যাসের চুলা যেমন অপরিহার্য, তেমনি এই গ্যাস এখন জনগণের কাঁধে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বলা থাকে "এলপিজি গ্যাসের মূল্য নির্ধারিত ৬৯০ টাকা।" কিন্তু বাজারে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, দোকানদার ও কোম্পানি উভয়ই মুনাফার অজুহাতে সরকারি মূল্যকে তাচ্ছিল্য করছে।
তাহলে প্রশ্ন উঠছে, জনগণের ট্যাক্সে গঠিত প্রশাসন কোথায়? কেন এই নিয়ন্ত্রণহীন বাজার এখনো নিয়ন্ত্রণের আওতায় আসছে না?
কেন সরকারি নির্ধারিত গ্যাস সাধারণ মানুষ পায় না, অথচ বড় বড় কোম্পানির গুদাম ভর্তি থাকে সেই সরকারি গ্যাসে?
জনগণের টাকায় তৈরি রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, প্রশাসন সব কিছুই জনগণের জন্য, কিন্তু বাস্তবে জনগণই যেন সব জায়গায় "বঞ্চিতের তালিকায়"।
এই গ্যাস কেলেঙ্কারি কেবল দামের বিষয় নয়, এটি প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও দুর্নীতির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গ্যাস যাচ্ছে কোথায় সরকারি গ্যাসের ব্যবসায় কারা জড়িত?
প্রশ্ন উঠছে সরকারি নির্ধারিত দামে গ্যাস উৎপাদন হয়, জনগণের জন্য বরাদ্দ হয়, কিন্তু সেই গ্যাস কেন সাধারণ নাগরিকের ঘরে পৌঁছায় না?
তদন্তে দেখা যাচ্ছে, একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট মাঠ পর্যায়ে এই গ্যাস বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। সরকারি গ্যাস বিভিন্ন কোম্পানির নামে বরাদ্দ হয়ে পরে বেসরকারি চ্যানেলে "রিফিল" করে বাজারে ছাড়ছে দ্বিগুণ দামে। অথচ প্রশাসনের চোখে যেন ঘন অন্ধকার।
এই সিন্ডিকেট শুধু অর্থনৈতিক নয়, এটি একটি প্রশাসনিক ব্যর্থতার প্রতিচ্ছবি। কারণ সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং ব্যবস্থা যদি কার্যকর হতো, তবে কোনো কোম্পানি ৬৯০ টাকার গ্যাস ১৬০০ টাকায় বিক্রি করার সাহস পেত না।
এই অনিয়ম শুধু জনগণকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে না এটি সরকারের ভাবমূর্তি ও বিশ্বাসযোগ্যতা ধ্বংস করছে।
কারণ জনগণ এখন প্রশ্ন করছে, "যে গ্যাস আমরা আমাদের ট্যাক্সের টাকায় পাই, সেটি কেন আমরা দ্বিগুণ দামে কিনব?"
কোম্পানিগুলো যখন সরকারি গ্যাস দখল করে মুনাফা করছে, তখন সরকার কি নিছক দর্শক হয়ে থাকবে?
জনগণ চায় উত্তর, পদক্ষেপ, এবং ন্যায়বিচার।
সরকারকে দেওয়া জনগণের হুঁশিয়ারি জবাবদিহিতা চাই এখনই
সরকারকে মনে রাখতে হবে এই দেশের মূল শক্তি জনগণ।
জনগণের ঘামে গড়া ট্যাক্সের টাকা দিয়ে সরকার চলে, মন্ত্রীদের বেতন হয়, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়।
তাই জনগণের মৌলিক অধিকার রক্ষার দায়িত্বও সরকারের।
- কেন গ্যাসের দাম সরকারি নির্ধারিত দামের চেয়ে দ্বিগুণ?
- কেন সাধারণ মানুষকে এই অন্যায়ের বোঝা বইতে হচ্ছে?
- কেন সিন্ডিকেটকে এখনো বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি?
এগুলো এমন প্রশ্ন, যেগুলোর উত্তর সরকারকেই দিতে হবে জনগণকে নয়।
জনগণ আর নীরব থাকবে না।
যদি সরকার জনগণের ট্যাক্সের বিনিময়ে সেবা না দিয়ে দুর্নীতির প্রশ্রয় দেয়, তবে জনগণ রাস্তায় নামবে কারণ জনগণ জানে, দেশ জনগণের, সরকারের নয়।
⚠️ জরুরি বার্তা
গ্যাস শুধু একটি পণ্য নয়, এটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের আবশ্যিক উপাদান।
৬৯০ টাকার সরকারি গ্যাস যদি ১৬০০ টাকায় বিক্রি হয়, তবে এটি কেবল অন্যায় নয়, এটি জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।
সরকার যদি এখনই এই চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়,
তবে জনগণই হবে সেই শক্তি,
যে শক্তি অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় ইতিহাসের মতো এবারও।
✍️ লেখক: মাইন উদ্দিন
সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক তথ্য তরঙ্গ
www.dailytotthotorongo.com
এই প্রতিবেদনটি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ন্যায্য অধিকার রক্ষার জন্য লেখা হয়েছে। আমরা আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই গুরুতর সমস্যা সমাধানে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং জনগণের প্রতি তাদের দায়িত্ব পালন করবে।
Join the conversation