জরুরি সংবাদ পাঠান: info@dailytotthotorongo.com আপনার এলাকার চোখ ও কান হতে পারেন! আপনার কাছ থেকে আসা প্রতিবেদন আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ছবি, ভিডিওসহ আপনার সংবাদ পাঠান — আমরা মনোযোগ দিয়ে যাচাই-বাছাই করব এবং যে গুলো প্রকাশ যোগ্য সে গুলো প্রকাশ করবো। আসুন, একসাথে সত্যিকার অর্থে মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠি। ✉️ ই-মেইল করুন: info@dailytotthotorongo.com

নতুন সিমের নামে মুলা ঝুলানো

এ যেন জনগণের সামনে একটা সোনার মুলা ঝুলিয়ে দেওয়া, যা ধরা যায় না, কিন্তু দেখলে মনে হয় হাতের নাগালেই আছে।
প্রকাশ: 10/16/2025 01:41:00 am

দৈনিক তথ্য তরঙ্গ

সত্যের পথে নির্ভীক সংবাদ

নতুন সিম বিতর্ক

সাধারণ মানুষের আশায় ব্যবসায়িক কৌশল?

বাংলাদেশের টেলিকম বাজারে সম্প্রতি একটি নতুন নাম ছড়িয়ে পড়েছে  "নতুন সিম আসছে", "আনলিমিটেড ইন্টারনেট থাকবে", "নিজেদের সিমে কল ফ্রি" এমন একের পর এক লোভনীয় প্রতিশ্রুতিতে সরব হয়ে উঠেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম।
বলা হচ্ছে, এই নতুন সিমটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিটিসিএল (BTCL) বা অন্য কোনো সরকারি সহযোগী সংস্থা চালু করবে। শোনা যাচ্ছে, এতে থাকবে আনলিমিটেড ডেটা, কোনো স্পিড লিমিট থাকবে না, আর নিজেদের সিমে কল একদম ফ্রি।

শুনতে দারুণ, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এই ঘোষণা কি সত্যিই বাস্তবায়নের পথে, নাকি সাধারণ মানুষের সামনে একটা "মুলা ঝুলানো"র চাতুরি?

🧩 প্রতিশ্রুতি বড়, বাস্তবতা অস্পষ্ট

এই কথিত "এমভিএনও (MVNO)" সিম নিয়ে এখনো পর্যন্ত সরকারের কোনো অফিসিয়াল অনুমোদন বা লাইসেন্স প্রকাশ করা হয়নি।
বিটিসিএল কেবলমাত্র "পরিকল্পনা করছে" বলে জানিয়েছে। অথচ সামাজিক মাধ্যমে খবর ছড়ানো হচ্ছে এমনভাবে যেন আগামী সপ্তাহেই সিমটি বাজারে চলে আসবে।

সাধারণ মানুষ বিশেষ করে যারা ব্যয়বহুল ইন্টারনেটের যন্ত্রণায় ক্লান্ত তারা এই আশায় বুক বাঁধছে যে এবার হয়তো কম টাকায় সব কিছু পাওয়া যাবে।
কিন্তু প্রযুক্তি ও বাজারের বাস্তব চিত্র বলে, "আনলিমিটেড ইন্টারনেট" বা "ফ্রি কল" এর প্রতিশ্রুতি কোনো ব্যবসায়িকভাবে টেকসই মডেল নয়, যদি না সেটির পেছনে বিশাল বিনিয়োগ, শক্ত নেটওয়ার্ক ও সরকারি অনুমোদন থাকে।

💰 আসল খেলা: বড় কোম্পানির ভয় ও চাপ

বাংলাদেশের মোবাইল বাজার ইতিমধ্যেই বড় বেসরকারি অপারেটরের হাতে গ্রামীণফোন, রবি  বাংলালিংক ও এয়ারটেল।
নতুন কোনো অপারেটর বা এমভিএনও যদি বাস্তবে আসে, তাহলে তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থে বড় ধাক্কা লাগবে।

এমন পরিস্থিতিতে অনেকের ধারণা যেভাবে এই "নতুন সিম" এর প্রচার চলছে, তার পেছনে হয়তো একটি অঘোষিত দরকষাকষির রাজনীতি কাজ করছে।
অর্থাৎ, নতুন প্রকল্পের নাম করে আলোচনায় আসা, সাধারণ মানুষের আগ্রহ সৃষ্টি করা, তারপর বড় কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে অঘোষিত অর্থনৈতিক সমঝোতা বা "চুপ থাকার চুক্তি" গ্রহণ করে প্রকল্পটি স্থগিত রাখা।

এ যেন জনগণের সামনে একটা সোনার মুলা ঝুলিয়ে দেওয়া, যা ধরা যায় না, কিন্তু দেখলে মনে হয় হাতের নাগালেই আছে।

সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা বনাম বাস্তবতা

মানুষ চায় সস্তায় ইন্টারনেট, সীমাহীন কল, এবং রাষ্ট্রীয় কোম্পানির স্বচ্ছ সেবা।
কিন্তু যতদিন পর্যন্ত এসব প্রকল্প BTRC-এর অনুমোদন, নেটওয়ার্ক অবকাঠামো, এবং বাস্তব বিনিয়োগ পরিকল্পনা প্রকাশ না করে—ততদিন পর্যন্ত এই সব খবরকে "ঘোষণার রাজনীতি" হিসেবেই দেখা উচিত।

কারণ বাংলাদেশে অতীতে "সিটিসেল ফিরে আসছে", "সরকারি মোবাইল কোম্পানি চালু হচ্ছে", "রাষ্ট্রীয় ইন্টারনেট ফ্রি হবে"— এমন অসংখ্য ঘোষণা এসেছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।

⚠️ মুলা নয়, বাস্তবতা চাই

জনগণের প্রত্যাশা নিয়ে খেলা করা একধরনের মানসিক প্রতারণা।
নতুন সিম হোক বা নতুন প্রযুক্তি—ঘোষণার আগে প্রমাণ চাই, অফিসিয়াল নথি চাই, এবং বাস্তব কার্যক্রম চাই।

🎯 আমাদের দাবি

  • স্পষ্ট ঘোষণা চাই - প্রকল্পের সময়সীমা ও বাস্তবায়ন পরিকল্পনা
  • অফিসিয়াল নথি চাই - BTRC অনুমোদন ও লাইসেন্স
  • বাস্তব কার্যক্রম চাই - ট্রায়াল ও পরীক্ষামূলক চালু
  • স্বচ্ছতা চাই - বিনিয়োগ পরিকল্পনা ও অর্থনৈতিক মডেল
কারণ, জনগণ এখন আর "মুলা ঝুলানো" গল্পে বিশ্বাস করে না।
তারা বাস্তব পরিবর্তন চায় কাগজে নয়, নেটওয়ার্কে।

এই বিশ্লেষণটি সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য লেখা হয়েছে। আমরা আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জনগণের প্রত্যাশার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে।

আমি আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি?
Type here...
-->