
চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের পক্ষে একজোট ৯ ওয়ার্ডের মেম্বার
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়ন এর বর্তমান চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন এর বিরুদ্ধে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া ৬,০০০ কেজি চাল আত্মসাত এর অভিযোগকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। নয় ওয়ার্ডের নির্বাচিত মেম্বাররা একযোগে সংবাদমাধ্যমে জানান, এ ধরনের অভিযোগের কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই এবং এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো হয়েছে।
অভিযোগের পটভূমি
সম্প্রতি একটি গোষ্ঠী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং মুখে মুখে প্রচার করতে শুরু করে যে চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন সরকারি ত্রাণ কর্মসূচির আওতায় প্রাপ্ত ৬,০০০ কেজি চাল আত্মসাৎ করেছেন। এ অভিযোগ ছড়িয়ে পড়ার পর বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোচনা শুরু হয়। কিন্তু নয় ওয়ার্ডের মেম্বাররা সাফ জানিয়ে দেন — এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়।
মেম্বারদের বক্তব্য — ‘অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা’
নির্বাচিত মেম্বাররা জানান, চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন সবসময় ত্রাণ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বজায় রেখেছেন এবং প্রাপ্ত সরকারি চাল নির্ধারিত নিয়মেই বিতরণ করেছেন। তাদের মতে, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী প্রতি মাসে চাল আসার কথা থাকলেও, ৬ মাস বিলম্ব হয়েছিল।
“চাল আসার ক্ষেত্রে দীর্ঘ ছয় মাসের বিলম্ব হয়েছিল। একসঙ্গে ৬ মাসের চাল একবারে এসে পৌঁছায়। আমাদের ইউনিয়নের কোনো পর্যাপ্ত পরিমাণ সরকারি গুদাম না থাকায় চেয়ারম্যান সাহেব প্রত্যেক ওয়ার্ডের মেম্বারদের ডাক দিয়ে আমাদের হাতে চাল তুলে দেন। আমরা সরাসরি আমাদের এলাকার মানুষের মাঝে সেই চাল বিতরণ করেছি।”
“যদি চেয়ারম্যান সাহেব চাল আত্মসাৎ করতেন, তাহলে এই নয় ওয়ার্ডের কেউ কি চাল পেতেন? বাস্তবে দেখা গেছে, প্রত্যেক ওয়ার্ডেই চাল পৌঁছে গেছে এবং নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী তা বিতরণ হয়েছে।”
চাল বিতরণের সারসংক্ষেপ
ওয়ার্ড | প্রাপ্ত চাল (কেজি) | বিতরণ অবস্থা |
---|---|---|
১-৯ | ৬,০০০ | পূর্ণ বিতরণ |
গুদামের অভাব ও বিতরণের দ্রুত ব্যবস্থা
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়নে বড় আকারের সরকারি গুদাম নেই। ফলে চাল আসার সাথে সাথেই চেয়ারম্যান মেম্বারদের হাতে তা হস্তান্তর করেন যাতে সঠিক সময়ে মানুষের কাছে পৌঁছে যায়।
“একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি সবসময় মানুষের স্বার্থকে প্রাধান্য দেন। চাল জমিয়ে রেখে কোনো রাজনৈতিক লাভ নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। বরং তিনি সবসময় চেষ্টা করেন দ্রুত বিতরণের মাধ্যমে মানুষের উপকারে আসতে।”
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার
স্থানীয় বিশ্লেষকদের মতে, এ অভিযোগের পেছনে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর হাত রয়েছে। নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে জনপ্রিয় নেতৃত্বকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য প্রতিপক্ষরা বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে।
“এটি স্পষ্টতই একটি রাজনৈতিক চক্রান্ত। যারা এলাকায় জনপ্রিয়তার দিক থেকে পিছিয়ে আছে, তারা অপপ্রচার চালিয়ে চেয়ারম্যানের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে। কিন্তু জনগণ এসব মিথ্যা প্রচারে কান দেবে না।”
জনগণের প্রতিক্রিয়া
সাধারণ মানুষ অভিযোগকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। উপকারভোগীরা জানিয়েছেন, তারা সঠিক সময়ে চাল পেয়েছেন। যদিও ৬ মাস পর একসাথে বিতরণের কারণে কিছু বিভ্রান্তি হয়েছিল, কিন্তু আত্মসাতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
“আমরা নিজের চোখে দেখেছি মেম্বাররা চাল বিতরণ করছেন। চেয়ারম্যান নিজে এসে দেখেছেন বিতরণের কাজ। তাই এসব অভিযোগ মিথ্যা।”
নিন্দা ও প্রতিবাদ
“আমরা দৃঢ়ভাবে জানাচ্ছি, চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে আনা চাল আত্মসাতের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এ অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই এবং যারা এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।”
চেয়ারম্যানের নিজস্ব বক্তব্য
“আমি সব সময় আমার ইউনিয়নের মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। কোনো ত্রাণ সামগ্রী আত্মসাত করা তো দূরের কথা, আমি চাই প্রতিটি প্রাপ্য মানুষ তার অধিকার সঠিক সময়ে পাক। যারা রাজনৈতিক স্বার্থে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য খুব শিগগিরই জনগণের কাছে স্পষ্ট হয়ে যাবে।”
“আমি চাই সত্যটা সবাই জানুক। প্রয়োজনে আমি আইনি লড়াই করব, কিন্তু আমার সততা নিয়ে কারো সন্দেহের অবকাশ রাখব না।”
ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইউনিয়নে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে স্থানীয় মানুষের একজোট সমর্থন চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের জন্য শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। প্রতিপক্ষের অপপ্রচার কতটা সফল হবে তা সময়ই বলবে, তবে আপাতত জনগণের এক কথা — “এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ এবং এর কঠোর প্রতিবাদ জানাই।”
Join the conversation