জরুরি সংবাদ পাঠান: info@dailytotthotorongo.com আপনার এলাকার চোখ ও কান হতে পারেন! আপনার কাছ থেকে আসা প্রতিবেদন আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ছবি, ভিডিওসহ আপনার সংবাদ পাঠান — আমরা মনোযোগ দিয়ে যাচাই-বাছাই করব এবং যে গুলো প্রকাশ যোগ্য সে গুলো প্রকাশ করবো। আসুন, একসাথে সত্যিকার অর্থে মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠি। ✉️ ই-মেইল করুন: info@dailytotthotorongo.com

বর্তমান যুগে ৩টি কাজ করলে বাঁশ নিশ্চিত! (অভিজ্ঞতা থেকে শেখা সতর্কবার্তা)

বিনা স্বার্থে উপকার, টাকা ধার ও অতিরিক্ত ভদ্রতা—বর্তমান যুগে কেন এগুলো ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, পড়ুন অভিজ্ঞতার আলোকে বিশ্লেষণ।
প্রকাশ: 8/01/2025 11:51:00 pm

দৈনিক তথ্য তরঙ্গ

সত্যের পথে নির্ভীক সংবাদ

বাঁশের ছবি
সংগৃহীত ছবি

বর্তমান যুগে তিনটা কাজ করলে বাঁশ নিশ্চিত

সময় বদলেছে, মানুষ বদলেছে, কিন্তু এক জিনিস যেন অপরিবর্তিত রয়ে গেছে—অন্যের কাছ থেকে ‘বাঁশ’ খাওয়ার সুযোগ! আগে মানুষ উপকার করলে কৃতজ্ঞতা পেত, ধার দিলে সম্মান পেত, আর ভদ্র ব্যবহার করলে সবাই আপন হতো। কিন্তু বর্তমান যুগে কিছু কিছু কাজ করলে উল্টো বিপদে পড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এখানে আমরা আলোচনা করব সেই তিনটি নিশ্চিত বাঁশ খাওয়ার কাজ—

  1. বিনা স্বার্থে উপকার করা
  2. টাকা ধার দেওয়া
  3. ভদ্র ব্যবহার করা

১. বিনা স্বার্থে উপকার করলে

আমরা ছোটবেলায় শিখেছি, অন্যের উপকার করলে আল্লাহও খুশি হন, মানুষও খুশি হয়। কিন্তু আজকের দিনে এসে দেখা যাচ্ছে, বিনা স্বার্থে উপকার করলে মানুষ খুশি হয় না—বরং সেটাকেই তারা নিজেদের অধিকার মনে করে নেয়।

ধরুন, আপনার এক বন্ধু সমস্যায় আছে—চাকরি হারিয়েছে, হাতে টাকা নেই, মনের অবস্থা খারাপ। আপনি নিজের সময়, শ্রম ও অর্থ খরচ করে তার পাশে দাঁড়ালেন। প্রথমদিকে সে ধন্যবাদ দিবে, কৃতজ্ঞতার গল্প করবে। কিন্তু কিছুদিন পরেই সে ভাবতে শুরু করবে—“ও তো আমার জন্য করবে—ও তো এমনিতেই ভালো মানুষ।” ধীরে ধীরে আপনার উপকারকে সে অবহেলা করতে শুরু করবে, এমনকি কোনো বিষয়ে যদি আপনি সাহায্য করতে না পারেন, তখন উল্টা অভিযোগও আসতে পারে—

“এতদিন তো পাশে ছিলি, আজ হঠাৎ এমন করলি কেন?”

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, অনেক সময় আপনি যার উপকার করেছেন, সেই মানুষটিই সুযোগ বুঝে আপনার বিপরীতে চলে যায়। কারণ উপকারের কৃতিত্ব আজকাল দীর্ঘস্থায়ী হয় না—মানুষ ভুলে যায়, কিন্তু কষ্ট দিলে সেটা সারা জীবন মনে রাখে।

২. টাকা ধার দিলে

টাকা ধার দেওয়া আজকের যুগে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ‘সাহায্য’। কারও হাতে টাকা কম, সমস্যা হয়েছে—আপনি ভাবলেন, “চলো কিছু টাকা দিয়ে সাহায্য করি, পরে ফেরত দেবে।” প্রথমে সে কৃতজ্ঞ হবে, বড় বড় কথা বলবে—

“আপনার টাকা আমি সময়মতো ফেরত দেবো, ইনশাআল্লাহ।”

কিন্তু বাস্তবে কী হয়? সময়মতো টাকা ফেরত আসে না, বরং আপনাকে এড়িয়ে চলা শুরু করে। ফোন করলে ধরবে না, মেসেজের রিপ্লাই দিবে না, এমনকি ফেসবুকে অ্যাক্টিভ থেকেও আপনার ইনবক্স ‘সিন’ করবে না। ধীরে ধীরে আপনি হয়ে যাবেন তার কাছে বিরক্তিকর এক মানুষ, যে “টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে”।

কিছুদিন পর যদি আপনি নিজের টাকাটা ফেরত চাইতে যান, তখন উল্টা আপনিই খারাপ হয়ে যান। সে বলতে পারে—

“আরে ভাই, টাকা কি এমন কিছু নাকি? একটু ধৈর্য ধরতে পারেন না?”

এমনকি অনেক সময় ধার দেওয়া মানুষটি এমনভাবে আচরণ করে যেন আপনি তার কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছেন! বাংলায় একটা কথা আছে—“ধার নিলে মানুষ আপনার, ফেরত চাইলে শত্রু”—এটা এই যুগে হুবহু সত্যি।

৩. ভদ্র ব্যবহার করলে

আমরা ভদ্রতা ও শিষ্টাচারকে ভালো গুণ হিসেবে জানি। কিন্তু আজকের অনেক পরিস্থিতিতে ভদ্রতা যেন দুর্বলতা হিসেবে দেখা হয়। আপনি যত বেশি ভদ্র, তত বেশি মানুষ আপনাকে ব্যবহার করবে।

ধরুন, কোনো অফিসে কাজ করছেন। সহকর্মী আপনার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করলেও আপনি চুপ থাকলেন, ভদ্রভাবে উত্তর দিলেন। সে ভাববে—“এই লোক কিছু বলতে পারবে না, এভাবে চলতে থাকবে।” একবার, দু’বার—এরপর সেটা আপনার জন্য অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে, আর তার কাছে আপনি ‘সাইলেন্ট ভিকটিম’ হয়ে থাকবেন।

এমনকি অনেক সামাজিক সম্পর্কেও ভদ্রতা আপনাকে ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। আপনি যদি কাউকে না বলতে দ্বিধা করেন, সবাই আপনার ওপর দায়িত্ব চাপাবে, আপনার সময় নষ্ট করবে, এবং আপনার ভদ্রতাকে ব্যবহার করে নিজের স্বার্থ হাসিল করবে।

কেন এই তিনটি কাজে বাঁশ খাওয়ার সম্ভাবনা বেশি?

এর মূল কারণ হলো মানুষের মানসিকতা। আজকের দিনে বেশিরভাগ মানুষ “দেওয়ার চেয়ে নেওয়ায়” বেশি অভ্যস্ত। তারা চায় অন্যেরা তাদের জন্য সবসময় ত্যাগ করবে, কিন্তু নিজে কোনো ত্যাগ স্বীকার করবে না। আর আপনি যদি বিনা স্বার্থে সাহায্য করেন, টাকা ধার দেন, বা ভদ্র ব্যবহার করেন—তারা সেটাকে সুযোগ হিসেবে নেবে, কৃতজ্ঞতা হিসেবে নয়

তাহলে কী করণীয়?

  • উপকার করার আগে ভেবে দেখুন, সেই মানুষটি আপনার কষ্ট বা ত্যাগের মূল্য বুঝবে কিনা।
  • টাকা ধার দেওয়ার আগে চুক্তি বা লিখিত প্রমাণ রাখুন, কিংবা নিশ্চিত হন যে ফেরত না পেলেও মানসিকভাবে ক্ষতি সহ্য করতে পারবেন।
  • ভদ্র ব্যবহার করুন, কিন্তু প্রয়োজন হলে দৃঢ় ও স্পষ্টভাবে নিজের সীমা নির্ধারণ করে দিন।

জীবনের বাস্তবতা হলো—সবাই আপনার মতো ভাববে না। আপনি যদি মনে করেন, আপনার ভালো মন, নিঃস্বার্থ সাহায্য আর ভদ্রতা সবাইকে আপনার প্রতি শ্রদ্ধাশীল করে তুলবে—তাহলে ভুল করবেন। আজকের সমাজে অনেক সময় এই গুণগুলোই আপনাকে দুর্বল হিসেবে উপস্থাপন করে, আর তখন বাঁশ খাওয়াটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।

তাই, ভালো মানুষ হোন, সাহায্য করুন, ভদ্র থাকুন—কিন্তু বোকা হবেন না। নিজের সম্মান, সময় ও অর্থের মূল্য বুঝুন। কারণ বর্তমান যুগে “বিনা স্বার্থে উপকার, টাকা ধার, আর অতি ভদ্রতা—এই তিনটিই বাঁশ খাওয়ার নিশ্চিত সূত্র।”

আমি আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি?
Type here...
-->