জরুরি সংবাদ পাঠান: info@dailytotthotorongo.com আপনার এলাকার চোখ ও কান হতে পারেন! আপনার কাছ থেকে আসা প্রতিবেদন আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ছবি, ভিডিওসহ আপনার সংবাদ পাঠান — আমরা মনোযোগ দিয়ে যাচাই-বাছাই করব এবং যে গুলো প্রকাশ যোগ্য সে গুলো প্রকাশ করবো। আসুন, একসাথে সত্যিকার অর্থে মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠি। ✉️ ই-মেইল করুন: info@dailytotthotorongo.com

সীমান্তে বিপুল স্বর্ণ উদ্ধার

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) আবারও বড় সফলতা পেয়েছে।
প্রকাশ: 7/26/2025 04:57:00 pm

দৈনিক তথ্য তরঙ্গ

সত্যের পথে নির্ভীক সংবাদ

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ৩১টি স্বর্ণের বার উদ্ধার, বিজিবির বড় সাফল্য

উদ্ধারকৃত স্বর্ণের বার
উদ্ধারকৃত ৩১টি স্বর্ণের বার বিজিবি সদর দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে (সংগৃহীত)

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) আবারও বড় সফলতা পেয়েছে। ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার কুমিল্লাপাড়া সীমান্তে আজ ভোররাতে বিজিবি'র একটি টহল দল ৩১টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করেছে। উদ্ধার হওয়া স্বর্ণের ওজন প্রায় ৪ কেজি ৩০৩ গ্রাম এবং যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

বিজিবি সূত্রে জানা যায়, ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের আওতাধীন কুমিল্লাপাড়া বিওপি (বর্ডার আউটপোস্ট)-এর একটি নিয়মিত টহল দল ভোর ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সীমান্ত এলাকায় টহলে যায়। এ সময় তারা দেখতে পান, একজন ব্যক্তি কাঁটাতারের কাছাকাছি সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করছে। বিজিবি সদস্যরা এগিয়ে গেলে ওই ব্যক্তি দৌড়ে পালিয়ে যায় এবং সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগ ফেলে রেখে যায়।

পরে বিজিবি সদস্যরা ওই ব্যাগটি তল্লাশি করে তিনটি লোহার পাত্র (ডিব্বা) উদ্ধার করে। প্রতিটি পাত্রের ভেতরে বেশ কয়েকটি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। গণনা করে দেখা যায়, মোট ৩১টি বার রয়েছে, যেগুলোর ওজন মোট ৪,৩০৩ গ্রাম।

তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপ

বিজিবি জানিয়েছে, উদ্ধারকৃত স্বর্ণের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্থানীয় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং স্বর্ণের চালানটি রাজস্ব কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। বর্তমানে চোরাকারবারিকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

“বিজিবি সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে। এ ধরনের সফল অভিযানে বিজিবির গোপন তথ্যভিত্তিক অপারেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।”
– লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল আলম, ৫৮ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক

সীমান্ত অঞ্চলে চোরাচালান: বাড়ছে তৎপরতা

মহেশপুর সীমান্ত এলাকা দীর্ঘদিন ধরেই স্বর্ণ, মাদক, এবং অবৈধ মালামালের চোরাচালানের জন্য ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় এই অঞ্চলে অবৈধ প্রবেশ, ছোট ছোট দলে চোরাকারবারি প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত কয়েক মাসেই মহেশপুরে একাধিকবার স্বর্ণ ও অন্যান্য পণ্যের বড় চালান ধরা পড়েছে। এপ্রিল মাসে একই সীমান্ত পয়েন্টে ২৩টি স্বর্ণের বার এবং মার্চে ৭৩৬ গ্রাম ওজনের স্বর্ণসহ একটি বড় চালান উদ্ধার করা হয়েছিল। তবে এবারের চালানটি গত কয়েক বছরের মধ্যে অন্যতম বড় উদ্ধার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বিজিবির কৌশল ও সীমান্ত নিরাপত্তা

বিজিবির একটি অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, বর্তমানে সীমান্ত এলাকায় নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • নতুন পর্যবেক্ষণ টাওয়ার স্থাপন
  • রাতের বেলায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার
  • ড্রোন পর্যবেক্ষণ
  • স্থানীয়দের সহায়তায় গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ

সীমান্ত এলাকায় গোপন ক্যামেরা বসানো এবং স্থানীয় সোর্সদের মাধ্যমে চোরাচালানকারীদের গতিবিধি নজরে রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি নিয়মিত ফ্ল্যাগ মিটিং ও যৌথ টহল কার্যক্রমও চলছে।

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া

ঘটনার পরপরই স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তির অনুভব দেখা গেছে। এলাকার অনেকেই বিজিবির এই তৎপরতা এবং সাফল্যের প্রশংসা করেন। অনেকে জানান, সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানের কারণে মাঝে মাঝে নিরাপত্তা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে পড়ে। এমন সফল অভিযান স্থানীয় জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনে।

উপসংহার

মহেশপুর সীমান্তে আজকের স্বর্ণ উদ্ধার অভিযান বিজিবির এক বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। এটি শুধু বড় অর্থমূল্যের একটি চোরাচালান প্রতিহত করল না, বরং সীমান্ত অঞ্চলে বিজিবির গোয়েন্দা ও কৌশলগত সক্ষমতারও পরিচয় দিল। ভবিষ্যতে এমন আরও অভিযান সফল হলে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো আরও নিরাপদ হবে বলে স্থানীয়রা আশা করছেন।

তথ্যসূত্র: বিজিবি প্রেস বিজ্ঞপ্তি, স্থানীয় সংবাদ সংস্থা এবং সীমান্ত টহল সংশ্লিষ্ট সূত্র।
আমি আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি?
Type here...
-->