📢 আপনি আপনার এলাকার চোখ ও কান হতে পারেন! আপনার কাছ থেকে আসা প্রতিটি সংবাদ আমাদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ছবি, ভিডিওসহ আপনার সংবাদ পাঠান — আমরা মনোযোগ দিয়ে যাচাই-বাছাই করব, এবং যেগুলো প্রকাশের যোগ্য সেগুলো আমরা সম্মানজনকভাবে সবার সামনে তুলে ধরবো। আসুন, একসাথে সত্যিকার অর্থে মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠি। ই-মেইল করুন: info@dailytotthotorongo.com

Header Ads

ধর্ম ও ইসলাম

দৈনিক তথ্য তরঙ্গ
প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০২৫ | ধর্ম ও ইসলাম 

🚍✈ চলন্ত যানবাহনে নামাজ আদায়: ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে সঠিক পদ্ধতি

চলন্ত যানবাহনে নামাজ আদায়
ফাইল ছবি

আধুনিক জীবনে মানুষের ব্যস্ততা ও যাতায়াত এতটাই বেড়ে গেছে যে, অনেক সময় নামাজের ওয়াক্ত চলন্ত যানবাহনের মধ্যেই চলে আসে। বিশেষ করে দীর্ঘ ভ্রমণ কিংবা সময়নির্ধারিত যানবাহনের (যেমনঃ ট্রেন, বিমান, লঞ্চ) ক্ষেত্রে নামাজ আদায় নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যান অনেকেই। প্রশ্ন উঠে, কেবলামুখী না হতে পারলে বা রুকু-সিজদা না করা গেলে কি নামাজ আদায় হবে?

ইসলামী শরীয়তের আলোকে চলন্ত যানবাহনে নামাজ আদায়ের সঠিক নিয়ম ও নির্দেশনাই আজকের এই লেখার মূল বিষয়।

চলন্ত যানবাহনে নামাজ আদায়ের মূলনীতি

ইসলামে নামাজ আদায়ের সময় ও স্থানের ব্যাপারে যতটুকু সহজতা রাখা হয়েছে, ততটুকুই গুরুত্বও আরোপ করা হয়েছে নামাজ যথাসম্ভব সঠিকভাবে আদায় করার ওপর। তাই যানবাহনের ধরন অনুযায়ী নামাজ আদায়ের পদ্ধতিও ভিন্ন হতে পারে।

1️⃣ ট্রেন, লঞ্চ, জাহাজ ও বিমানের ক্ষেত্রে

যেসব যানবাহন অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল এবং সেখানে চলাফেরা করা কিছুটা সহজ — যেমন: 🚢 লঞ্চ/জাহাজ, 🚄 ট্রেন, বিমান — সেখানে ফরজ নামাজ আদায়ের জন্য প্রথম চেষ্টা থাকবে:

  • কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা,
  • সম্ভব হলে স্বাভাবিক রুকু ও সিজদাসহ নামাজ পড়া।

📌 যদি দাঁড়িয়ে পড়া সম্ভব না হয়, তাহলে বসে রুকু ও সিজদার আদায়ের মাধ্যমে নামাজ আদায় করবে।

📌 আর যদি কেবলামুখী হওয়া, দাঁড়ানো বা রুকু-সিজদার মতো অবস্থান গ্রহণ করা পুরোপুরি অসম্ভব হয়, তখন ইশারার মাধ্যমে (হালকা মাথা ও শরীর হেলানোর মাধ্যমে) নামাজ আদায় করবে।

উল্লেখ্য: উপরোক্ত নিয়মে নামাজ আদায় করলে পুনরায় কাজা করার প্রয়োজন নেই।

2️⃣ বাস বা মাইক্রোবাসের মতো যানবাহনে

বাস বা মাইক্রোবাস সাধারণত ছোট ও কনজেস্টেড হওয়ায় সেখানে দাঁড়িয়ে বা কেবলামুখী হয়ে নামাজ পড়া বেশ কঠিন।

📍কাছাকাছি গন্তব্য হলে:

যদি ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগে গন্তব্যে পৌঁছে স্বাভাবিকভাবে নামাজ আদায় সম্ভব হয়, তবে নামাজ দেরিতে গন্তব্যে গিয়ে আদায় করা উত্তম।

যদি মনে হয় ওয়াক্ত শেষ হয়ে যাবে, এবং নামাজ পড়ার জন্য নামা ঝুঁকিপূর্ণ নয়, তাহলে পথিমধ্যেই নেমে নামাজ আদায় করে নেওয়া উচিত।

📍দূরের গন্তব্য হলে:

যদি নামতে ঝুঁকি বা অসুবিধা থাকে এবং বাস থামে না, তাহলে সিটেই বসে, কেবলা যেদিকে হোক না কেন, ইশারায় নামাজ পড়ে নিবে।

পরে সতর্কতামূলকভাবে এ নামাজ কাজা করে নেওয়া উত্তম হবে।

🌙 কেবলামুখী হওয়া কি ফরজ?

শারঈ দৃষ্টিকোণ থেকে কেবলার দিকে মুখ করা নামাজের একটি শর্ত। তবে যাত্রা ও ভয়ভীতির মতো অবস্থা হলে এ শর্ত হালকা হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলা বলেন:

"ফাত্তাকুল্লাহা মাস্তাতাআ’তুম"
অর্থ: সম্ভবপর পরিমাণ আল্লাহকে ভয় করো।
— (সূরা আত-তাগাবুন: ১৬)

অতএব, যেভাবে সম্ভব, যতটুকু সম্ভব — সে অনুযায়ী নামাজ আদায় করা ইসলামে গ্রহণযোগ্য।

🌿 বিশেষ কয়েকটি ফিকহি সূত্র

  • ইলাউস সুনান: ৭/২১২
  • মাআরিফুস সুনান: ৩/৩৯৪
  • আদ্দুররুল মুখতার: ২/১০১

উল্লেখিত কিতাবগুলোতে চলন্ত অবস্থায় নামাজ আদায়ের ব্যাপারে প্রামাণ্য ফতোয়া ও মতামত প্রদান করা হয়েছে, যেখানে সুবিধা ও অসুবিধা উভয়ের ভিত্তিতে শরীয়তের সহজ বিধান প্রযোজ্য হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা আমাদের ওপর নামাজ ফরজ করেছেন — কিন্তু তিনি কোনো রকম অসুবিধা চাননি। তাই ইসলাম আমাদের সহজতম পথও শিখিয়ে দিয়েছে। চলন্ত যানবাহনে নামাজ পড়া জরুরি হলেও পরিস্থিতি বুঝে শরীয়তের সীমার মধ্যে থেকে নামাজ আদায় করা বুদ্ধিমানের কাজ।

নিয়ত থাকবে — আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যথাসম্ভব সঠিকভাবে নামাজ আদায় করা। আল্লাহর রহমতে এই নিয়ত ও প্রয়াসই আমাদের ইবাদতকে কবুল করে নেবে ইনশাআল্লাহ।

🔁 পুনরায় পড়ার প্রয়োজনীয়তা:

যদি কেউ ইশারায় বা অস্বাভাবিকভাবে নামাজ আদায় করে — তখন সুযোগ পেলে সতর্কতামূলকভাবে তা পুনরায় পড়া ভালো।

No comments

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

Powered by Blogger.