
ভালো মানুষের নীরবতা – অন্ধকারের অদৃশ্য হাত
যে সমাজে অন্যায় ঘটে, সেখানে দুই ধরনের মানুষ থাকে—
১. যারা অন্যায় করে।
২. যারা অন্যায় দেখে চুপ থাকে।
প্রথম শ্রেণির মানুষের সংখ্যা অনেক সময় কম হয়, কিন্তু দ্বিতীয় শ্রেণির নীরবতা তাদের শক্তি হাজার গুণ বাড়িয়ে দেয়।
কারণ, অন্যায় তখনই ফুলে-ফেঁপে ওঠে, যখন তার পথে কোনো বাধা দাঁড়ায় না।
নীরবতার মনস্তত্ত্ব
ভালো মানুষ নীরব থাকে অনেক কারণে—
- ভয়: অন্যায়ের বিরুদ্ধে গেলে ক্ষতি হতে পারে, এই ভয় অনেকের মধ্যে থাকে।
- উদাসীনতা: "আমার জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলছে না, তাই দরকার নেই।"
- অবিশ্বাস: "আমি কিছু বললেও কিছু বদলাবে না।"
উদাহরণস্বরূপ, যদি আব্দুল্লাহ আল মামুন বাজারে দেখেন একজন বৃদ্ধাকে ঠকিয়ে টাকা নেওয়া হচ্ছে, কিন্তু ভয়ে বা ব্যস্ততায় তিনি কিছু না বলেন—তাহলে সেই প্রতারক আরও সাহসী হয়ে উঠবে।
নীরবতার শৃঙ্খল
নীরবতা এক ধরনের শৃঙ্খল, যা ধীরে ধীরে গোটা সমাজকে বেঁধে ফেলে।
আজ যদি এক জন চুপ থাকে, কাল আরও পাঁচ জন চুপ থাকবে।
ফলাফল—
- অন্যায় সাধারণ হয়ে যায়।
- সৎ মানুষ কমতে থাকে।
- খারাপ মানুষ তাদের কাজকে বৈধ বলে দাবি করে।
নীরবতার সামাজিক মূল্য
প্রতিটি নীরবতা এক একটি হারানো সুযোগ।
যখন একজন ভালো মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেন না, তখন তিনি অজান্তেই অন্যায়কে সমর্থন করেন।
এটা যেন নদীর বাঁধে ছোট্ট ফাটল দেখা দিলেও মেরামত না করা—শুরুতে ক্ষুদ্র হলেও একসময় পুরো গ্রাম ভেসে যায়।
ভালো মানুষের দায়িত্ব
ভালো মানুষের আসল দায়িত্ব শুধু ভালো থাকা নয়, বরং অন্যকে খারাপ হতে না দেওয়া।
আব্দুল্লাহ আল মামুন যদি অফিসে দেখেন কেউ দুর্নীতি করছে, আর তিনি চুপ থাকেন—তাহলে তাঁর সততা কাগজে কলমে থাকবে, কিন্তু সমাজে এর কোনো প্রভাব পড়বে না।
বরং, এক মুহূর্তের সাহস—প্রমাণ সংগ্রহ, প্রতিবাদ, বা অন্তত সঠিক ব্যক্তিকে জানানো—অন্যায় থামাতে পারে।
অন্ধকারের সবচেয়ে বড় সহযোগী
অনেকেই ভাবে, খারাপ মানুষের সংখ্যা বেশি বলে সমাজে অন্ধকার ছড়ায়।
বাস্তবে, অন্ধকারের সবচেয়ে বড় সহযোগী হলো সেই ভালো মানুষদের নীরবতা, যারা দেখতে পেয়েও কিছু করেন না।
খারাপ মানুষ জানে, যতক্ষণ ভালো মানুষ চুপ আছে, ততক্ষণ তাদের জয়ের পথ পরিষ্কার।
Join the conversation