ছাত্রশিবিরের ৮.৭ মাত্রার ভূমিকম্প।
দৈনিক তথ্য তরঙ্গ
সত্যের পথে নির্ভীক সংবাদ
ছাত্রশিবিরের ৮.৭ মাত্রার ভূমিকম্প, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে একটি শক্ত বার্তা

চট্টগ্রাম, চকবাজার | তথ্য তরঙ্গ প্রতিবেদন: সম্প্রতি চট্টগ্রামের চকবাজার এলাকায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে একটি প্রতীকী বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে তারা জানিয়েছে, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে তারা "৮.৭ মাত্রার ভূমিকম্প" ঘটিয়েছে। এটি কোনো প্রকৃত ভূকম্পন না হলেও, বার্তাটি এক ধরনের সামাজিক ও সাংগঠনিক প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে ছড়িয়ে পড়েছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের আলোচনার সূত্রপাত করেছে।
চট্টগ্রামের চকবাজার দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল হলেও, এ এলাকায় কিছু অপরাধীচক্র চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সাধারণ ব্যবসায়ী ও জনসাধারণকে হয়রানি করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই চক্রগুলো বিভিন্ন অজুহাতে অর্থ আদায়, দখলবাজি এবং ভয়ভীতির মাধ্যমে এলাকা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
এই পরিস্থিতিতে ছাত্রশিবিরের তরফ থেকে প্রতীকী 'ভূমিকম্প' ঘটানোর ঘোষণা মূলত এই অপরাধচক্রের বিরুদ্ধে একটি সোচ্চার প্রতিবাদ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। তারা জানিয়েছে, এই বার্তা কোনো দল বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়, বরং দেশের স্বার্থে, জনগণের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার অংশ হিসেবে দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রশিবির তাদের প্রচারণায় বারবার উল্লেখ করেছে যে, তারা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা, ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, যদি সমাজের ভিতরে গড়ে ওঠা অপরাধী সিন্ডিকেট ও দুর্বৃত্ত গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কেউ কথা না বলে, তাহলে সাধারণ জনগণের জীবনে স্থিতিশীলতা আসবে না।
এই অবস্থায় তারা একটি সাংগঠনিক দায়িত্ববোধ থেকে দেশের স্বার্থে শান্তিপূর্ণ ও প্রতীকী প্রতিবাদ জানিয়েছে, যাতে প্রশাসন, মিডিয়া এবং জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়।
চট্টগ্রামের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অঞ্চলে চাঁদাবাজি ও অপরাধের অভিযোগ নতুন কিছু নয়। কিন্তু সম্প্রতি কিছু ঘটনায় স্থানীয় জনগণ উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা, চাঁদা চাওয়া, অথবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হুমকির ঘটনা অনেক সময় অভিযোগ হিসেবে উঠে এসেছে।
এই পরিস্থিতিতে ছাত্রশিবিরের এমন পদক্ষেপ জনমনে এক ধরনের আশাবাদ তৈরি করেছে যে, কেউ অন্তত এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে।
তবে এও বলা জরুরি, এ ধরনের যেকোনো প্রতিবাদ অবশ্যই শান্তিপূর্ণ এবং আইনের মধ্যে থেকে হওয়া উচিত। প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এসব অভিযোগ গুরুত্বের সাথে নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
'৮.৭ মাত্রার ভূমিকম্প'—এই বাক্যাংশটি বাস্তবে কোনো ভূকম্পন নয়, বরং একধরনের প্রতীকী প্রতিবাদ বা প্রতিবিপ্লবের বার্তা। এই ধরণের কৌশলমূলক ভাষা বিভিন্ন সংগঠন অতীতে ব্যবহার করেছে জনসচেতনতা গড়ে তুলতে এবং সংগঠনের সক্রিয়তা প্রকাশ করতে।
তবে এর মাধ্যমে যে বার্তাটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটি হলো—'আর নয় নিরবতা', যারা দেশের ভিতরে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও অপশাসনের সঙ্গে জড়িত, তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে ছাত্রশিবির মাঠে নেমেছে। তারা দেশের প্রতি তাদের দায়িত্ববোধের অংশ হিসেবেই এই ভূমিকম্পের কথা বলছে।
এই ঘটনার পর নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে—চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার দায়িত্ব আসলে কার?
এটি অবশ্যই প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব।
তবে যদি সমাজের সচেতন যুবসমাজ, শিক্ষার্থী ও সংগঠনগুলো এগিয়ে আসে এবং শান্তিপূর্ণভাবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, সেটি দেশের জন্য আশাব্যঞ্জক।
তবে অবশ্যই সকল প্রচারণা ও কর্মসূচি হতে হবে শান্তিপূর্ণ, আইনগত কাঠামোর মধ্যে এবং সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
Join the conversation